হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ অবরু'দ্ধ হন। এরপর তিনি দাবি করেন, স'ঙ্গে থাকা ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। এ বি'ষয়ে এবার মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।রোববার (৪ এপ্রিল) সংসদে এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামুনুলের বি'ষয়ে উ'দ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘ওই নারী তার স্ত্রী নন।’ ঘটনার প্রস'ঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোনারগাঁও উপজে'লার একটি বেসরকারি হোটেলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক একজন নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। টেলিভিশনে ওই নারী তা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন। তিনি তার স্ত্রী নন। এ বি'ষয়ে আরও ঘটনা জেনে সবাইকে জানাব।’মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওই ঘটনার পর দেখলাম ওই রিসোর্টের ওপর আ'ক্রমণ। কেন এই আ'ক্রমণ আমা'র জানা নেই।








সেখানে কয়েকজন বিদেশি ছিলেন। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে তাদের রক্ষা করেছে।’ হেফাজতের তাণ্ডবের প্রস'ঙ্গে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে এই ধরনের তাণ্ডব কেন, নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। আমর'া ত'দন্ত করে দেখছি। যারাই তাণ্ডব করে থাকুক তাদের বিরু'দ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি।’এদিকে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নানান প্রশ্নের মধ্যে রোববার (৪ এপ্রিল) সকালে মাওলানা মামুনুল হক তার স্ত্রীকে নিয়ে নিজস্ব ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ওই নারীর স'ঙ্গে তার কী সম্পর্ক, সে বি'ষয়টি স্পষ্ট করেছেন তিনি। মামুনুলের স্ট্যাটাসটি সময় নিউজের পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধ’রা হলো: ‘হাফেজ শহিদুল ইসলাম আমা'র ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের একজন। সাংগঠনিক কাজে আমা'র দু-চারজন সহযোগীর অন্যতম।
বেশ পুরনো আমা'দের সম্পর্ক। সম্পর্কের গভীরতা পারিবারিক পরিধি পর্যন্ত। পরিবারসহ একে অ’পরের বাসায় যাতায়াত আমা'দের দীর্ঘদিনের। সেই সূত্রে তার পারিবারিক অ'ভিভাবকত্ব করতাম আমি। পারিবারিকভাবে খুঁটিনাটি বি'ষয়ে পরামর'্শের জন্য তারা আমা'র দ্বারস্থ 'হতো। দুই সন্তানের ছোট সংসার নিয়ে চলছিল তাদের জীবন। একটা পর্যায়ে এসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বি'ষয় নিয়ে শুরু হয় মনোমালিন্য। মনোমালিন্য থেকে বাদানুবাদ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু। আজ থেকে তিন বছর আগের কথা। তখন তাদের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি আমি। তাদের উভয়ের স'ঙ্গে কথা বলি। কিন্তু কোনোভাবেই আর সেটি সম্ভব হয়নি। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তাদের। ছাড়াছাড়ির পর দ্বিতীয় সংসার শুরু করেন হাফেজ শ’হীদুল ইসলাম। সেই বিবাহ আমি পড়াই। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করছেন। সেই ঘরে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে আরেকটি সন্তান। অ’পরদিকে হাফেজ শ’হীদ ভাইয়ের স্ত্রী হয়ে যায় অনেকটা অসহায়।
এক রকমের কূলকিনারাহীন। রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমা'র শরণাপন্ন হন। উদ্ভূ'ত পরিস্থিতিতে করণীয় বি'ষয়ে পরামর'্শ নেন। সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার।ইসলামি দৃষ্টিকোণ এবং অ'ভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বি'ষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমা'র স'ঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে।








এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর স'ঙ্গে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমা'র কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। তখন আমি সি'দ্ধান্ত নিই, যত দিন তার অ'ভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমা'র, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অ'ভিভাবকত্ব করব না,
বরং ইসলামি শরিয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করে নেব। বি'ষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের স'ঙ্গে কথা বলি এবং এ বি'ষয়ে তাদের জানিয়ে শরিয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নিই।দুই বছর ধরে এভাবেই মানবিক ও ইসলামি দৃষ্টিভ'ঙ্গির আলোকে আমি তার অ'ভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বা'স করি। আমি যা বললাম, এটা আল্লাহর নামের হাজারবার শপথ করে বলতে পারব। বি'ষয়টি বিশ্বা'সযোগ্য করার জন্য কুল্লামা'র শপথও করতে পারি।








বি'ষয়টি খোলাসা করার পরেও যুবলীগ, আওয়ামী লীগের গু'ণ্ডারা আমা'র স'ঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হা'মলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এই হা'মলা ও আচরণ প্রমাণ করে বর্তমানে বাংলাদেশে মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপ'ত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না।’গতকাল শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রয়াল রিসোর্টের ৫ম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ‘নারীসহ’ অবরু'দ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা।
পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উ'দ্ধার করে। মামুনুল হকের দাবি, স'ঙ্গে থাকা নারী নাম আমিনা তৈয়ব। তিনি মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী। আমিনাকে স'ঙ্গে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুক্ত হয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে গিয়ে বলেন, আপনাদের ভালোবাসার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। সাংবাদিক ও পুলিশ আমা'র স'ঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেনি। কিছু বাইরের লোক খারাপ আচরণ করেছে। আমি আমা'র দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম।’ মামুনুল হকের দাবি, স'ঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তৈয়ব। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী।







